পজেটিভ বা নেগেটিভ নয়, আলোচনা হতে হবে তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করে। মজার বিষয় হল, এবারের বাজেট ও সাধারণ ভোক্তার পরিস্থিতির সাথে হবুহু মিলে গেছে। চাইলেও যা বাদ বা ওভার লুক করা সম্ভব নয়,কদম আলীকে থামালাম।

বললাম, থাম, দারুণ মিল খুঁজে পেয়েছ তো! সাধারণ ভোক্তার মতো সরকারকে প্রয়োজনের গুরুত্ব অনুসারে খরচ করা বা ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

ও বলল, গুরুত্ব অনুসারে খরচ কাটেল করার বিষয়, বহু আগে শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে বাঁচার জন্য খরচের ওয়ে আউট করছে। বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায় সরকার টিকে থাকা বা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মূল বাজেটের ৩৪% সঞ্চালন বায়। সরকার পরিচালনার সাথে যুক্ত থাকা সবার বেতন ভাতা সহ আনুষঙ্গিক খরচ। বিষয়টা সাধারণ ভোক্তার চাল ডাল তেল লবণ সহ বাসা ভাড়ার খরচের মতো, বাঁচতে হলে করতে হবে।

বললাম, বাজেটে পরের অবস্থানে গৃহীত ঋণের সুদ, মূল বাজেটের প্রায় ৩৩ শতাংশ। বিষয়টা দেশে থাকা চার কোটি পরিবার, যারা ঋণ করে চলছে। বর্তমানে গৃহীত ঋণের সুদে পরিশোধ না করলে, নতুন ঋণ পাওয়া দূরের বিষয় উল্টো মামলায় ঘর ছাড়তে হবে। দেশ তো দেশের বাহিরে যেতে পরে না। নিয়মিত ঋণ পরিশোধের সুনাম ধর রাখতে পারবে না। দেশের ভিতরের ব্যাংক ঋণ নিতে পারলেও, দেশের বাহিরের ঋণ পাওয়া কষ্টকর হবে। দেশের ব্যাংক গুলো থেকে সরকার অধিক ঋণ নিলে, স্থানীয় বিনিয়োগ কমে যাবে। বাকি থাকল মূল বাজেটের ৩৩ শতাংশ, যা দেশের উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক খরচ।

ও বলল, শুধু ঋণে সংসার চালানো পরিবারের কথা বললা, ধনীদের ঋণ খেলাপির পরিমাণ সর্বকালের সেরা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১.৯৬ লাখ কোটি টাকা, সেটা আদায়ের নির্দেশনা বাজেটে থাকা উচিত ছিল। ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণ করাদের ঘর ছাড়া করলে ও ঋণ খেলাপিগণ কিন্তু দামি গাড়িতে চড়ে ব্যাংকার দের সাথে ঘুরে বেড়ায়। সরকার নিয়ম করেছে তারা নিজ নামে সম্পদ কিনতে পারবে না, সেটা কি তাদের আর দরকার আছে? স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে ব্যাংকের তারল্য না বাড়াতে পারলে, স্থানীয় বিনিয়োগ বা বাজেট ঘাড়তি পূরণ সম্ভব হবে না।

বললাম, বাজেট ঘাড়তি ২.৫৬ লাখ কোটি টাকা, দেশি বিদেশি ঋণ নির্ভর। যা পরের অর্থ বছরে ঋণের সুদ প্রথম স্থান দখল করবে। রাজস্ব আদায়ের টার্গেট, সয়ং চেয়ারম্যান বলেছেন সম্ভব নয়। রাজস্ব আদায়ের টার্গেট যতটুকু শর্ট পরবে, ঠিক সেই পরিমাণ নতুন বাজেট ঘাড়তি বাড়বে। প্রতি বছরের মতো সংশোধিত বাজেট করা হবে, রাজস্ব টার্গেট কমিয়ে। কেন শুরুতে বাস্তব ভিত্তিক বাজেট প্রাকলোন করা হয় না, বিষয়টা এমন না তো, শুরুতে সবার চোখ ধাঁধানো বাজেট দিয়ে বিশালত্ব জাহির করা?

ও বলল, সরকারের পরিকল্পনা তোমার চিন্তার মধ্যে থাকলে, তাহলে পলিসি মেকার হিসাবে নাম থাকতো। চিন্তা করার ক্ষমতা নাই বলে খালি লিখতে পার, যা করো নজরে আসে না। তারপরও সুযোগ দিলাম, বল বর্তমানে সরকারের করনিয় কী হবে।

বললাম, বৈষয়িক অবস্থা ও অভ্যন্তরীণ ঋণের বোঝা না বাড়িয়ে, নতুন মেগা প্রকল্প শুরু না করা, যেগুলোর ৮০% শেষ হয়েছে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা, ৫০% অধিক শেষ হওয়া গুলোর গতি ধীর করা। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির বাস্তব ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা। ভ্যাট আদায় বৃদ্ধির দাবি হল, “ঝরে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে” প্রবাদের মতো। টাকার ম্যান যে হারে কমেছে, সে হারের সমান ভ্যাট আদায় বাড়ে নাই। বিষয়টা মাথা পিছু গড় আয় বাড়ার নায়। আয়কর আদায়ের গুরুত্ব দিতে হবে। বাবসায়ীদের সম্পদ বৃদ্ধির হিসাব থাকে, সরকারি চাকরি করাদের সম্পদের তালিকা কেন অবসরে যাওয়ার পর খোজা হয়।

ও বলল, এ সব বিষয়ে অধিক বললে চাকরি চলে যেতে পারে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স হওয়ায় শাস্তির আইন পাস হয় নাই বলে আমার কিছু হবে না। তোমার বিচার করার আইন আছে বা সেকেন্ড হোম নাই যে পালিয়ে বাঁচবে।
বললাম, দেশে প্রচলিত প্রবাদ “সাঁতারের উপরে পানি নাই আর মরণের বিপদ নাই”।

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *